Friday, March 9, 2018

বাংলাদেশের দেশী কোচ বনাম বিদেশী কোচ বিতর্ক ,পূর্বে দেখা কিছু অভিজ্ঞতা আর কিছু কথা ( পর্ব -১ )

 লিখেছেন আমাদের গ্রুপ এডমিন Saikat Bhowmik দাদা।
১৯৯২ বিশ্বকাপ পর্যন্ত আইসিসির সহযোগী দেশগুলোর মাঝে কেবল মাত্র একটি দেশই অংশগ্রহণ করতে পারতো মূলপর্বে যেটা ১৯৯২ সালের আইসিসির এক সিদ্ধান্তে পরিবর্তন হয়ে করা হয় তিনটি সহযোগী সদস্য দেশ নিয়ে ১৯৯৬ বিশ্বকাপ খেলার ব্যাপারে যে বিশ্বকাপের আয়োজক ছিলো ভারত - শ্রীলংকা পাকিস্তান
 
১৯৯০ সালে হল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া আইসিসি ট্রফির তৃতীয় স্থান লাভকারী বাংলাদেশ এই সিদ্ধান্তে হয়ে ওঠে আশাবাদী সেই স্বপ্ন আশার আলো দেখাতে থাকে মূল পর্বে যাওয়ার জন্যে অন্যতম বাধা এন্ডি ফ্লাওয়ার , গ্রান্ট ফ্লাওয়ারদের জিম্বাবুয়ের টেস্ট স্ট্যাটাসের অর্জনের কারনে তাদের আর আইসিসি টুর্ণামেন্ট প্রতিপক্ষ হিসেবে না পাওয়াও
 
সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিতে গিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রথমবারের মতন নিয়োগ দেয়া হয় দীর্ঘমেয়াদী ' হাই প্রোফাইল ' কোচ কোচ হয়ে আসেন ১৯৮৩ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারতের মহিন্দর অমরনাথ যিনি সেই টুর্ণামেন্টের ফাইনালের প্লেয়ার অফ দ্যা ম্যাচ ছিলেন
Mohinder Amarnath
অমরনাথ দায়িত্ব নেয়ার আগেও বাংলাদেশ ক্রিকেট চলছিলো তবে সেখানে ছিলো না কোন নতুনত্ব আর ১৯৯৩ সালের শুরুর দিকে উনি আশার পরে প্রথমেই জোর দেয়া হয় খেলোয়াড়দের ফিটনেসের দিকে

ফিটনেসের উপরে জোর দেয়াতে দলের ভেতরে বাইরে চলে নানারুপ প্রতিক্রিয়া তবে সেটা প্রকাশ পায় অধিনায়কত্ব নিয়ে যেটা গড়ায় সেই আমলের মন্ত্রনালয় পর্যন্ত ১৯৯০ সাল থেকে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মিনহাজুল আবেদীন বরাবরই ছিলেন অমরনাথের বিরুদ্ধাচারন করা একজন যিনি মানতে চাইতেন না কোন প্ল্যান প্রোগ্রাম এক পর্যায়ে অমরনাথ বোর্ড সভাপতির কাছে দাবী করেন যে নান্নুকে না সরালে উনি থাকবেন না আর বোর্ড সভাপতি গিয়ে সেই আমলের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মুস্তাফিজুর রহমানের কাছে দাবী করে বলেন নান্নুকে না সরালে উনাকেও সরিয়ে দেয়ার জন্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সব শুনে বলেন " এতো টাকা পয়সা খরচ করে যেহেতু এনেছি তখন ......... " নান্নুর পরবর্তীতে অধিনায়ক কে হবেন এই প্রসঙ্গ যখন এলো তখন নাম এলো ফারুক আকরাম খানের কিন্তু আকরাম খান যেহেতু আগে অধিনায়কত্ব করেন নি তাই কেনিয়া গামী দলের অধিনায়ক করা হলো ফারুককেই যে দলের সদস্য ছিলেন গোলাম নওশের প্রিন্স, আতহার আলী খান, ফারুক আহমেদ, আমিনুল ইসলাম, আকরাম খান, সেলিম শাহেদ, জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার দুলুরা আর অমরনাথ সেই দলে অন্তর্ভুক্ত করেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকতদের যে দল নির্বাচনে অমরনাথের কাছে জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের তারকাখ্যাতির চেয়েও মুখ্য ছিলো ফিটনেস পারফরম্যান্স তবে সেখানেও কিছুটা বিতর্ক ছিলো কারন কোচের পছন্দে দলে সুযোগ পেয়ে যায় রকিবুল হাসানের ছেলে সাজিদ হাসান কেনিয়া গিয়ে একজন অফস্পিনার অন্তর্ভুক্তির অনুরোধ করাতে বাদ পরে যেতে হয় পেসার সাইফুলকে

Minhajul Abedin
কেনিয়াতে টুর্ণামেন্টের শুরুটা বাংলাদেশের ভালো হলেও গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ।যার কারনে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলতে হয় হল্যান্ড, কেনিয়া হংকংয়ের বিপক্ষে হল্যান্ডের বিপক্ষে স্বল্প রান তাড়া করতে গিয়েও হেরে যায় বাংলাদেশ আর তাই কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটাই হয়ে ওঠে ডু অর ডাই ম্যাচ যেখানে কেনিয়া বাংলাদেশকে জয়ের জন্যে লক্ষ্য দেয় ২৯৬ রানের মিনহাজুল আবেদীন নান্নু সেই ম্যাচে ভালো খেলছিলেন তবে ড্রেসিং রুম থেকে কোচ , ম্যানেজার সিনিয়র ক্রিকেটারদের পাঠানো দ্রুত রান তোলার বার্তাকে অগ্রাহ্য করে খেলে যান নিজের মতন করে আর ৬৮ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশ হারে সেই ম্যাচ ১৩ রানে যে ম্যাচে নান্নুর ব্যাটিং মোটিভ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিসিবির সেই আমলের কোষাধ্যক্ষ ১৯৮৬ আইসিসি ট্রফির বাংলাদেশ দলের ম্যানেজারের ভূমিকা পালন করতে যাওয়া কেনিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচ চলাকালীন সময়ে ড্রেসিং রুমে থাকা রেজা- করিম বলেন " নান্নু কী মোটিভ নিয়ে খেলেছে, আল্লাহই জানেন , দ্রুত খেললে আমরা জিতে যেতাম।এই বয়সে কাউকে খেপানোর জন্য বলছি না। ওকে দিয়ে আমি, কোচ অন্য সিনিয়র খেলোয়াড়রা চেষ্টা করেছি। বার্তা পাঠানো হয়েছে দ্রুত খেলার। তবু কাজ হয়নি। মনে হয়, নেতৃত্ব হারানোর বেদনা ওর মধ্যে ছিল।

সেই হারের পরে হংকং এর সাথে জিতলেও দুই ম্যাচ হেরে আর ১৯৯৬ বিশ্বকাপ খেলা হয় নি বাংলাদেশের
আর সেই টুর্ণামেন্টের পরেই বিদায় হয় বাংলাদেশের প্রথম '' হাই - প্রোফাইল " কোচ খ্যাত মহিন্দর অমরনাথের

( চলবে )