Sunday, March 4, 2018

মার্টিন ক্রো - আধুনিক ক্রিকেটের টি২০ ধারণার প্রবর্তক

লেখাটি লিখেছেন আমাদের গ্রুপ এডমিন সৈকত ভৌমিক দাদা। ☺

আধুনিক ফরমেটের টোয়েন্টি ২০ ক্রিকেট মূলত যার মাথা থেকে প্রথম আসে তিনি মার্টিন ক্রো যাকে সেই হিসেবে বলা হতে পারে টি২০ ক্রিকেটের জনক । উনার নামটা মনে পড়তেই সামনে চলে আসে কিছু ইনিংসের ব্যাটিং দেখার সৌভাগ্য আর সেই সিদ্ধান্ত টা যখন তিনি অফ স্পিনার দীপক প্যাটেলকে দিয়ে বোলিংয়ের সূচনা করান নতুন বলে আর সেটাও কিন্তু প্রথম কোন স্পিনারের নতুন বলে বোলিং করার ঘটনা।
১৯৯২ বিশ্বকাপটা মার্টিন ক্রোর জন্যে আসলে কেউ ভুলতে পারবে না।৯ ম্যাচ খেলে করেছিলেন ৪৫৬ রান! গড় ছিল ১১৪। নিউজিল্যান্ডের হয়ে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি করা ক্রিকেটারের নাম ব্রেন্ডন ম্যাককালাম কিন্তু এই নামটা হতেই পারতো মার্টিন ক্রো এর কারণ, উনার সর্বোচ্চ রান যে ২৯৯।
২২ গজের জীবনটা শেষ হয়ে গিয়েছিল মাত্র ৩৩ বছর বয়সেই হাটুর ইনজুরিতে।৭৭ টেস্টে ৪৫.৩৬ গড়ে ৫৪৪৪ রান করা ক্রোর আসল ব্যাটিং সৌন্দর্য ছিলো এমনই যা টিভির সামনে থেকে ওঠার উপায় ছিলো। পুল শট ছিলো দেখার মতন আর উনার সামনের বোলারদের আসলে এতোটাই ভাবতে হতো উনাকে নিয়ে যে প্রতিপক্ষ দলের পরিকল্পনা তে থাকতো ক্রো শুধু ব্যাটিং এ কি করবে তা না বরং তার দলকে কিভাবে সাজাবে তাও।


অনেকের ধারনা পিঞ্চ হিটিং প্রথম উদ্ভাবন করে শ্রীলংকা জয়সুরিয়া, কালুভিতারানা কে দিয়ে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে কিন্তু বাস্তবতা হলো শ্রীলংকার সেই চিন্তার প্রেরণা বলি বা বিশ্ব ক্রিকেটের পিঞ্চ হিটিং চিন্তার জনক বলি তাও কিন্তু মার্টিন ক্রো যিনি মার্ক গ্রেটব্যাচকে ওপেনিং এ পাঠিয়ে ' পিঞ্চ হিটিং ' শব্দের ধারনা বুনে দেয় ক্রিকেট অভিধানে। আর দীপক প্যাটেলকে দিয়ে যখন অফ স্পিনার হিসেবেই বোলিং ওপেনিং করাচ্ছিলো তখন ম্যাচের খেলোয়াড়রা না শুধু বরং ধারাভাষ্যকাররাও দ্বন্দে পড়ে গেছিলেন আর খবর নিচ্ছিলেন যে নিউজিল্যান্ডের কোন পেসার কি অসুস্থ কিনা। অসুস্থ ছিলো না বরং সেই স্পিনার দিয়ে ইনিংসের বোলিং শুরু করে প্রতিপক্ষকে দ্বিধাতে ফেলে দেয়াই ছিলো উনার পরিকল্পনা।

তবে সবচাইতে বড় উদ্ভাবনীটা উনার মাথাতে আসে একজন ধারাভাষ্যকার হিসেবে যখন উনি ১৯৯৫ স্কাইয়ের হয়ে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় যখন বলছিলেন ওয়ানডের চেয়েও ছোট একটা সংস্করণ করলে কেমন হয়? আর এর পরেই শুরু হয় চিন্তাভাবনা ও কার্যকরিতা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে তাই মার্টিন ক্রোর মস্তিষ্কপ্রসূত বললে খুব একটা বাড়িয়ে বলা হবে না।

বিশ্ব ক্রিকেট আসলে মার্টিন ক্রো কে ভুলতে পারে না কোনভাবেই আর যখনই কোন স্পিন বোলার নতুন বলে বোলিং করতে আসবে বা পিঞ্চ হিটিং নিয়ে কথা বলবে বা টি ২০ ফরম্যাটের কথা বলা হবে তখনই মনে করতে হবে উনাকে ।

২০১৬ সালের ৩রা মার্চ ক্যান্সারের সাথে লড়াইয়ে হারতে মানতে হয় উনাকে।

No comments:

Post a Comment